ঢাকা , বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মহালছড়িতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ শ্রীপুরে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে থানার এএসআই ক্লোজড সাঘাটার ভূমিদস্যু সুইট ও সহযোগীদের শাস্তির দাবি ফুলবাড়ীতে প্রতিপক্ষের গাড়ি ভাঙচুর ও মারপিট ৩১ শয্যার হাসপাতালে ২২ পদ শূন্য, ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেননি ডিসি আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা আসামি ছিনিয়ে নিল জনতা বান্দরবানে হত্যা মামলা তুলে নিতে হুমকি আমতলীতে ৫০ শয্যা হাসপাতালে ২২জন স্টাফদের মধ্যে১৬ জনের শুন্যপদ থাকায় চিকিৎসাসেবা ঝুঁকে পরছে হেরা ফেরি ৩-তে ফিরছেন টাবু বাশার-তিশার নতুন রোমান্সের গল্প ‘বসন্ত বৌরি’ ওজন কমাতে সার্জারি, প্রাণ গেল মেক্সিকান ইনফ্লুয়েন্সারের ‘স্কুইড গেম’ অভিনেত্রী লি জু-শিল আর নেই বিচ্ছেদের পর ফের নতুন প্রেম খুঁজছেন মালাইকা অরোরা? দেশের প্রেক্ষাগৃহে ‘বলী’ আসছে ৭ ফেব্রুয়ারি হামলার পর প্রথমবার জনসমক্ষে সাইফ আলী খান অবশেষে প্রকাশ্যে এলো চিত্রনায়িকা পপির স্বামী-সন্তানসহ ছবি সমালোচনা সহ্য না হলে উপদেষ্টা পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দল করেন-রিজভী

সিন্ডিকেটের দখলে বাজার অসহায় ক্রেতাসাধারণ

  • আপলোড সময় : ০৫-১০-২০২৪ ১২:৩৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৫-১০-২০২৪ ১২:৩৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
সিন্ডিকেটের দখলে বাজার অসহায় ক্রেতাসাধারণ

* দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বহুমুখী অস্থিরতা বিরাজ করছে
* ডিমের বাজারে চরম অস্থিরতা, ডজন ১৮০ টাকা
* অন্তর্বর্তী সরকারের দুই মাসে চালের দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে
* স্বস্তি ফেরাতে পারেনি মুরগির বাজারে
* ইলিশ কেজিতে ২০০ টাকা বেশি

গত ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। দেশের  পেশাজীবী থেকে শুরু করে আপামর সকলের ধারণা ছিল দ্রব্যমূলসহ সবকিছুই সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে চলে আসবে। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রায় দুই মাস হলেও কোনো কিছুরই দাম কমেনি। রাজধানীর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে অসহায় হয়ে পড়েছে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। একের পর এক বাড়ছে সকল নিত্যপণ্যের দাম। একইসঙ্গে উল্টো দেশজুড়ে সকল মানুষের মধ্যে বহুমুখী সমস্যায় অস্থিরতা বিরাজ করছে। এমনকি সরকারি কোন ঘোষণারও প্রতিফলন ঘটেনা খুচরা বাজারে। এসব নিয়ে ক্রেতারা অজস্র অভিযোগ করছে, আর বিক্রেতাদের রয়েছে নানা যুক্তি। নেই কেবল তদারকি করার কোন সংস্থা।
সরজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর পাইকারী-খুচরা ও কাঁচাবাজারে ক্রেতাদের অনেক দিন ধরেই স্বস্তি নেই। গত দুই-তিন ধরে বৃষ্টির অজুহাতে বেগুনের কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের কেজি ৩৪০ থেকে ৪০০ টাকা। অন্য সবজির দামও বেড়েছে। কোনো সবজিই ৮০ থেকে ১২ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। ইলিশের কেজি ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা, ডিমের ডজন ১৮০ টাকা, ব্রয়লারের কেজি ২০০ টাকা। খাসি মুরগী বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা। পাকিস্তানী লাল মুরগী বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা। দেশী মুরগী বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। দাম বেঁধে দেয়ার পরও এসব জিনিসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বাজার লাগামহীন হয়ে পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন রাজধানীতে বসবাসরত নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত সকল পেশাশ্রেনীর মানুষ। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের শাসনভার গ্রহণ করেছে নতুন সরকার। অন্তর্বর্তী এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বাজার নিয়ন্ত্রণে বেশ জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের ইঙ্গিত দয়ে। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম তো কমেইনি, বরং বেড়েছে। বাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। শুধু হাত বদল হয়েছে।
পরিসংখ্যান বিবেচনায়, বছরের ব্যবধানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে। তবে বাজারে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। ‘কম’ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে মানুষ এখন বাজারে গিয়ে হাঁসফাঁস করছেন। বছরের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ। নিত্যপণ্য থেকে শাকসবজির দাম ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবি, রাজধানীর টাউন হল বাজার, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় বাজার যাত্রাবাড়ী। এই বাজার থেকেই মূলত ডেমরাসহ বিভিন্ন বাজারের পাইকাররা নিত্যপন্য ক্রয় করে খুচরা বাজারে বিক্রি করেন। ভোর হতে না হতেই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাছের বাজারে বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সমাগমে মুখরিত হয়। এছাড়াও সকল প্রকার সবজি এই বাজারে পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে সকল জিনিসপত্রে দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে বলে জানালেন আবদুল্লাহ্ নামে একজন ক্রেতা। বাড়তি দামের ব্যাপারে মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারের মনির স্টোরের আনোয়ার হোসেন বলেন, এক চিনি ছাড়া সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। বছরের ব্যবধানে ১৪০ টাকার মুগডাল ১৮০ টাকা হয়েছে। ছোলার দামও কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা, পেঁয়াজ, আলুর দামও অনেক বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আলু ও পেঁয়াজে শুল্ক কমালেও দাম কমছে না। আমরা পাইকারিতে কম দামে পেলে ভোক্তাদের কম দামেই দিতে পারব। সিন্ডিকেট বন্ধ করলে কমবে দাম। তা ছাড়া সম্ভব না। এ সময় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জয়নাল আবেদিন নামে এক ক্রেতা বলেন, কী আর বলব, কচুরলতি ১৪০ টাকা কেজি। বরবটি ১৬০ টাকা কেজি। বেগুন ১৮০ টাকা। পেঁয়াজ ১২০ টাকা। আলু ৫৫-৬০ টাকা। এ যেন দেশজুড়ে বাজারে চলছে মগের মুল্লুক। আন্দোলন করে সরকার বদলের সময় প্রথম প্রথম অনেক কিছু বলা হয়। কিন্তু বাজারে ঢোকা যায় না। এটা তারা দেখে না। দেখলে ব্যবস্থা নেয় না কেন? তারা সিন্ডিকেট ভাঙতে পারে না কেন? সাবেক মন্ত্রী, সচিব, ব্যবসায়ীসহ অনেককে গ্রেফতার করতে পারলে সিন্ডিকেট চক্রকে ধরতে পারে না কেন? গোয়েন্দারা কী করছে। এভাবেই তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে যা-ই বলুক, গোড়াতে কেউ হাত দেয় না। তবে সবজির দাম কেমন জানতে চাইলে বিক্রেতা নূরে আলম শিকদার বলেন, আমরা আশা করেছিলাম কিছু একটা হবে। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের দুই মাস হয়ে গেল। তার পরও দেখছি দাম আগের মতো। মানুষ আমাদের গালাগাল করে। পাইকারিতেই আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বেগুন ১৬০-১৮০ টাকা কেজি, শসা ৮০, মরিচ ৩৪০-৪০০ টাকা, শিম ৩০০, ঢ্যাঁড়স ও পটোল ৭০-৮০, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা। গত বছরও বৃষ্টি, বন্যা ছিল দেশে। তার পরও বছরের ব্যবধানে বলা যায় প্রায় সবজির দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় জসিম উদ্দিন নামে এক ক্রেতা বলেন, আগে যে অবস্থা ছিল। এখন দেখছি একই দশা। যে যার মতো দাম নিচ্ছে। কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যদি থাকত তাহলে এখনো ১২০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ ও ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে আলু কিনতে হতো না। সাধারণ মানুষকে তো স্বস্তি দিতে হবে। আমরা তো বাজারে ঢুকতে পারছি না।কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজারেও দেখা গেছে একই চিত্র। সব পণ্য বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের বাজারে চরম অস্থিরতা, ডজন ১৮০ টাকা : সরবরাহ সংকটের অজুহাতে গত কয়েকদিনে দফায় দফায় বেড়েছে ডিমের দাম। এ নিয়ে নতুন করে চাপে পড়েছেন ভোক্তারা। অন্তর্বর্তী সরকার ডিমের দাম বেঁধে দিলেও দুই-তিন দিনের ব্যবধানে হালিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। স্থানীয় বাজারগুলোতে ডিমের হালি এখন ৬০ টাকা এবং ডজন ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ার জন্য ক্ষুদ্র খামারি এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও তেজগাঁওয়ের পাইকারি ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দুষছেন। সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় বসলেও পণ্যমূল্য না কমায় হতাশা ব্যক্ত করছেন ক্রেতা-ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, সরকারের পরির্তন হলেও বাজার সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ এখনো দেখা যাচ্ছে না। তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল জানান, সাত হাত বদলের কারণেই ডিমের দামে অস্থিরতা, দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে। আড়তে অযৌক্তিক দামে বিক্রি করা হলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। আর তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে মধ্যস্বত্বভোগীর মাধ্যমে ডিম কিনতে হয়। সরাসরি ফার্ম থেকে কেনা যায় না। এই ক্রয়-বিক্রয়ে পাকা রসিদও পাওয়া যায় না। ফলে মধ্যস্বত্বভোগীরা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ডিম বিক্রি করে। এতে ডিমের দামেও চরম ভুগতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সরকার খুচরা পর্যায়ে প্রতি ডজনের দাম ১৪৪ টাকা বেঁধে দিয়েছে। তবে বাস্তবতা এর ধারে কাছেও নেই। তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হানিফ মিয়া বলেন, পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। তাই বাড়তি দাম। করার কিছু নেই। পাইকারিতে ১২ টাকা ৮০ পয়সা পিস বা ১৫৪ টাকা ডজনে কিনে সেই ডিম ১৬৫-১৭০ টাকা ডজন বিক্রি করা হলেও ছোট বাজার, পাড়া-মহাল্লায় ১৮০ টাকার কমে পাওয়া যায় না। টাউন হল বাজারের ডিম ব্যবসায়ী কামাল বলেন, তেজগাঁও থেকে বেশি দামে কেনা। ১৬৫ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। এর কম হবে না। গত বছর এ সময়ে ডজন ছিল ১৫০-১৬০ টাকা। বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১৫-২০ টাকা। অপর ডিম ব্যবসায়ী শফিকও তার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন। তবে ডিমের দাম প্রসঙ্গে আয়শা খানম নামে এক ক্রেতা বলেন, সরকার ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে অনেক আগেই। যেখানে সরকার নির্ধারিত দাম হওয়ার কথা প্রতি পিস ১০/১১ টাকা, সেখানে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা করে। এক হালি ডিম নিয়েছি ৬০ টাকায়। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম, নতুন সরকার এলে বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে সবকিছুর একটা যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দেবে। অথচ এখন পর্যন্ত তার কোনো দৃশ্যমান প্রতিফলন নেই। কবির হোসেন নামের একজন রিকশাচালক আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের মতো যারা নিয়মিত মাছ মাংস খেতে পারে না, তাদের জন্য ডিম আলুই ছিল ভরসা। এখন দেখি দিন দিন এসবের দামও বাড়তে শুরু করেছে। যে ডিমের দাম সর্বোচ্চ হওয়া উচিত ৩০/৩৫ টাকা হালি, সেটা এখন ৬০ টাকা। আলুর দামও কমার কোনো লক্ষণ নেই।
স্বস্তি ফেরাতে পারেনি মুরগির বাজারেন : দাম বাড়তে থাকায় অন্য পণ্যের মতো সরকার ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দামও বেঁধে দিয়েছে। তবে তা মানা হয় না। দাম বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি সরকার ব্রয়লার মুরগির দাম ২৮০ টাকা ও সোনালির দাম ২৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। তবে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সোনালি বিক্রি হয়েছে ২৮০ টাকায়। হাতিরপুল বাজারের মায়ের দোয়া পোলট্রি হাউজের দ্বীন ইসলাম বলেন, চাহিদার ওপর দাম কমবেশি হচ্ছে। তাই বেশি দামেই ব্রয়লার বিক্রি করতে হচ্ছে। গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা বলছেন, সব জিনিসের দাম বেশি। তাহলে গরুর মাংসের দাম কমবে কীভাবে? আগের মতোই ৭৫০-৭৮০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। হাতিরপুল হল বাজারের পাপ্পু বলেন, গরু আমদানি করলে ও সিন্ডিকেট ভাঙলে হয়তো দাম কমতে পারে। তা না হলে কমবে না।
ইলিশ কেজিতে ২০০ টাকা বেশি : খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, শক্তভাবে না ধরলে কমবে না ইলিশের দাম। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-কাওরানবাজারসহ সব জায়গায় ইলিশের দাম কেজিতে ২০০ থেকে ২৫০টাকা বেড়েছে। এ ব্যাপারে টাউন হল বাজারের মাছ বিক্রেতা রাজু বলেন, আড়তে কমলে আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারব। আগের চেয়ে দাম কিছুটা কমেছে। এক কেজি ওজনের ওপরের কেজি ২ হাজার ১০০ টাকা, ৯৫০ গ্রাম ওজনের কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকা। সিন্ডিকেট না ভাঙলে কমবে না দাম। গত বছরের চেয়ে কেজিতে ১৫০-২০০ টাকা বেড়েছে। রুইসহ অন্য মাছের দামও কমেনি বলে বিভিন্ন বাজারের খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই মাসে চালের দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় দুই মাস পরও ভাঙেনি চালের সিন্ডিকেট। আগের মতোই বেশি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে। গতকালও মিনিকেট ৭০-৭৬ টাকা, আটাশ চাল ৫৮-৬০ ও মোটা চাল ৫২-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়। কারওয়ান বাজারের চাল বিক্রেতা আওয়াল বলেন, সরকার অনেককে ধরছে। জেলে দিচ্ছে। কিন্তু বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না। এটা করতে না পারলে চালের দাম কমবে না। দাম না কমার ব্যাপারে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সহসভাপতি ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে ছাত্র-জনতার সরকার ক্ষমতায় এসেছে। তারা ভোক্তাদের মনে অনেক আশা জাগিয়েছে। কিন্তু দুই মাস চলে গেলেও ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফেরেনি। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ হয়নি। তারা কেন দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, এটা আমাদের কাছেও বোধগম্য নয়। কারণ আগে যারা চাঁদাবাজি করত। এখন তো তারা নেই। শুধু হাত বদল হয়েছে। আগের মতোই মহাসড়ক-ঘাটে, সব জায়গায় চাঁদাবাজি হচ্ছে। এটা সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখে না। ভোক্তা অধিদফতর নামমাত্র অভিযান পরিচালনা করছে। এতে কাজ হবে না। থানা পর্যায়ে সরকারের অভিযান চালাতে হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যারা বেশি লাভ করে বা ভোক্তাদের ঠকায়, তারা ব্যবসায়ী হতে পারে না। অসাধু ব্যবসায়ী বলে কিছু নেই। তারা ডাকাতের চেয়েও খারাপ। তাই বেশি করে অভিযান চালিয়ে তাদের আরও বেশি করে ধরা দরকার। বছরের ব্যবধানে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি কমেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ ছিল। গত মাসে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশে নেমেছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা যারা রিপোর্ট করেছে তারাই জানে। কারণ সব জিনিসের দাম বেড়েছে। তাহলে মূল্যস্ফীতি কীভাবে কমে। সরকারকে খুশি করার জন্য তারা এ রিপোর্ট হয়তো দিয়েছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স